Header Ads

বিভিন্ন ধর্ম গ্রন্থের মতে আল্লাহ প্রভু ঈশ্বর সৃষ্টিকর্তা একজনই

 


বিভিন্ন
ধর্ম গ্রন্থের মতে

আল্লাহ প্রভু ঈশ্বর সৃষ্টিকর্তা একজনই

 

আস্সালামুআলাইক্কুম

প্রিয় দর্শক

আমাদের মনে প্রশ্ন জগতে পারে কে এই বিশ্ব ভ্রম্মান্ডকে সৃষ্টি করেছেন?

ধরে নিলাম এক জন না একজন এই বিশ্ব ভ্রম্মান্ডকে সৃষ্টি করেছেন, বিশ্ব ভ্রম্মান্ডতো এক এক সৃষ্টি হয়নিকেউ না কেউ এটিকে সৃষ্টি করেছেন বিশ্ব ভ্রম্মান্ড বলতে পৃথিবী, সকল গ্রহ উপগ্রহ এবং সূর্য্য সহ অসংখ নক্ষত্রকে বোঝায় বিশ্ব ভ্রম্মান্ডে সূর্য্যের মতো আরো কোটি কোটি নক্ষত্র রয়েছে  

বিজ্ঞানীরা বলেন, সূর্য্যের চেয়ে অনেক অনেকগুন্ বড় নক্ষত্রও রয়েছে তাহলে কে এই সৃষ্টি কর্তা? এর আগের একটি লিখায় আমি এই সৃষ্টি কর্তার পরিচিতি উপস্থাপনের চেষ্টা করেছি আমার নিজের পক্ষ থেকে যুক্তি দিয়ে নয়  পৃথিবীর বিভিন্ন ধর্ম গ্রন্থ, দার্শনিকদের দৃষ্টিভঙ্গি বৈজ্ঞানিক প্রামানিক ভিত্তিতে ওই ভিডিওতে আমরা দেখেছি যে সৃষ্টি কর্তা আছেন ধর্ম চিন্তা R Thought চ্যানেলের ওই ভিডিওটি যারা দেখেননি, তাদেরকে নিচে দেয়া লিংকে ক্লিক করে দেখে নেয়ার জন্য অনুরোধ রইলো

 

https://www.youtube.com/watch?v=zjcypKPNPrc&t=170s

 

আগের ভিডিওতে এটি প্রমাণিত হয়েছে যে সৃষ্টি কর্তা আছেন তবে বিভিন্ন ধর্ম মতে সৃষ্টি কর্তার সংখ্যা নিয়ে অনেক মতভেদ রয়েছে

সৃষ্টিকর্তা কজন, আজকের ভিডিওতে আমরা ব্যাপারটির একটি ফয়সালায় আসার চেষ্টা করবো

পৃথিবীর বিভিন্ন গ্রন্থ থেকে আজ আমরা জানবো যে  আমাদের সৃষ্টিকর্তা কজন।  মানে আল্লাহ বা প্রভু কজন? যিনি আমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন, তিনি এই পৃথিবীটাও সৃষ্টি করেছেন।  শুধু কি তাই? চন্দ্র সূর্য্যসহ এই বিশ্ব ভ্রম্মান্ডও তিনিই সৃষ্টি করেছেন।

সৃষ্টিকর্তার  সংখ্যা নিয়ে বিভিন্ন ধর্মে বিভিন্ন মতবাদ রয়েছে।  তবে সেমেটিক সকল ধর্মগুলো অধিকাংশই সৃষ্টিকর্তা একজন বলে শিকার করে থাকে।  তবে সেমেটিক ধর্মগুলোর মধ্যে কোনো কোনো ধর্মে সৃষ্টি কর্তা একজন মেনে নিলেও সৃষ্টির কাউকে কাউকে সৃষ্টিকর্তার সমকক্ষ ভাবা হয়েছে। সেমেটিক ধর্ম হলো পয়গাম্বর নূহ আলাইহিসসালামের পুত্র শ্যাম বা সেম এর বংশ হতে আবির্ভুত ধর্ম সমূহ।  সেমের বংশ হতে উদ্ভুত বলে এ ধর্মগুলোকে সেমেটিক ধর্ম বলে। এ ধর্মগুলোকে পয়গম্বরী ধর্ম বলা হয়।  যেমন, য়াহুদী ধর্ম, খ্রিস্টান ধর্ম ও ইসলাম ধর্ম।

ইহুদি ধর্মের প্রবর্তক হচ্ছেন হজরত মুসা আলাইহিসসালাম, খ্রিস্টান ধর্মের প্রবর্তক হচ্ছেন হজরত ঈসা আলাইহিসসালাম ও ইসলাম ধর্মের প্রবর্তক হচ্ছেন হজরত মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু  আলাইহিসসালাম।

এই ধর্মগুলোর ধর্মগ্রন্থের মূল সংস্করণের মাপকাঠিতে অর্থাৎ  আল্লাহ কর্তৃক প্রেরিত মূল গ্রন্থ অনুসারে এই তিনটি ধর্মকেই ইসলাম ধর্ম বলে মনে করা হয়।

তবে ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের মতে পূর্বেকার নাজিলকৃত ইহুদিদের ধর্মগ্রন্থ তাওরাত অর্থাৎ তোরা এবং খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের ইঞ্জিল অর্থাৎ বাইবেল বর্তমানে-প্রাপ্ত সংস্করণগুলো পরিবর্তিত আকারে রয়েছে। এবং এই পরিবর্তিত সংস্করণগুলোর অনুসারীগণকে মুসলিমরা সৃষ্টিকর্তার একাত্মতায় অশ্বিকারকারী বা কাফের বলে পরিগণিত করেন।

সেমেটিক ধর্মগুলোর বাইরে যে ধর্মগুলো রয়েছে, সেগুলোকে অপয়গম্বরী ধর্ম, নন সেমেটিক ধর্ম হিসেবে মনে করা হয়। যেমন, হিন্দু ধর্ম, বুদ্ধ ধর্ম, শিখ ধর্ম, ইত্যাদি।

এ ধর্মগুলো সামাজিক ন্যায়নীতি ও নীতি-নৈতিকতাকে কেন্দ্র করে প্রবর্তিত।  কোনো মনীষী বা সামাজিক নেতৃত্ব শ্রেণীর বা সৃষ্টিকর্তাকে নিয়ে সার্বক্ষণিক ভাবনাকারী সাধকদের কর্তৃক এ সকল ধর্মের ধর্মীয় গ্রন্থগুলো রচিত হয়েছে। অর্থাৎ, এ ধর্মগুলো কোনো সম্প্রদায়, ব্যাক্তি, ব্যাক্তিবর্গ দ্বারা সৃষ্ট এবং যা প্রাকৃতিক কোনো সর্বোচ্চ-শক্তিমান বস্তু, ব্যাক্তি বা কর্তৃপক্ষের উপর বিশ্বাসী। অর্থাৎ, ননসেমেটিক ধর্মের অনুসারীরা শক্তির উৎসকে পূজা পাওয়ার উপযুক্ত মনে করেন। 

কেবল মাত্র সেমেটিক ধর্মগুলোর গ্রন্থগুলোকেই সৃষ্টিকর্তা কর্তৃক প্রেরিত ধর্ম গ্রন্থ বলে ধরে নেয়া হয়, যদিও এ সকল বিষয়াবলী নিয়ে বিভিন্ন ধর্মে বিতর্ক রয়েছে।

সেমেটিক ধর্মভুক্ত ধর্মগুলোর ধর্মগ্রন্থ তোরা, বাইবেল ও কোরানের মতে সৃষ্টিকর্তা একজন, যদিও বর্তমানকার তোরা ও বাইবেলের কোনো কোনো সংকরণের মতে সৃষ্টিকর্তা একজন হলেও তিনি সকল কাজকর্ম একা সম্পাদন করেন না ।  একারণে তিনি তার সৃষ্ট কোনো মহা মানবদের  সাহায্য নিয়ে থাকেন। 

যেমন, খ্রিষ্টানরা যীশু অর্থাৎ ঈসা নবীকে মানুষদের সাহায্য করার জন্য আল্লাহের কাছ হতে আল্লাহের সমান ক্ষমতা প্রাপ্ত বলে মনে করেন। আবার খ্রিস্টানদের এক অংশ আবার যীশু নবীকে আল্লাহর পুত্র বলে মনে করেন। বর্তমানে প্রাপ্ত বাইবেলের কয়েকটি সংস্করণে নবী যীশুকে আল্লাহর পুত্র বলে অভিহিত করার উক্তি রয়েছে।

অ-সেমেটিক ধর্মগুলোর বেশির ভাগ ধর্মগ্রন্থগুলোই সৃষ্টিকর্তা একজন বলে মেনে নিলেও হিন্দু ধর্মের কোনো কোনো গ্রন্থে একাধিক সৃষ্টিকর্তাকে মেনে নেয়া হয়েছে, যদিও হিন্দু ধর্মের কোনো কোনো গ্রন্থ মতে সৃষ্টিকর্তা একজনই।

আবার সেমেটিক ধর্মের বাইরের কিছু কিছু ধর্মের অনুসারীরা পৃথিবীতে সৃষ্ট বস্তুসমূহ যেমন চন্দ্র, সূর্য্য, পাহাড়, পর্বত, আগুন, পানি ইত্যাদিকে তাদের প্রভু মনে করে এদের পূজা করে থাকেন।  কারণ তাদের মতে এ বস্তুগুলো মানব সমাজের জন্য সেবা দিয়ে থাকে। হিন্দু ধর্মে মনে করা হয়, দেবতারা নিষ্পাপ মানব মনেও  বসবাস করেন।  এ কারণে শিশুসহ নিষ্পাপ মানবদের পূজাও হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা করে থাকেন।

একেশ্বরবাদকে যে সকল নন সেমেটিক ধর্ম বা ধর্মের কিছু কিছু সম্প্রদায় স্বীকার করে নেয়, সেগুলো হলো ব্যাবিজম, বাহাই, চেওন্ডোইজম, খ্রিস্ট, দেবত্ববাদ, দ্রুজিজম, একাংকার, শিখ, শিব-হিন্দু, বৈষ্ণব হিন্দু, ইসলাম, ইহুদি, ম্যান্ডেইজম, রাস্তাফারি, সেচো-নো-ইয়েন, টেংরিকইও,ইয়াজিদি এবং অ্যাটেনিজম।

এতোক্ষনের আলোচনায় এটা বোঝা গেলো যে আল্লাহ বা সৃষ্টিকর্তার একাত্বতার ব্যাপারে সকল ধর্মের একই রকম ধারণা নেই। সেমেটিক ধর্মসমূহ মতে,  পৃথিবীতে সৃষ্টিকর্তা তার প্রতিনিধিদের মাধ্যমে অথাৎ নবী রাসূলদের মাধ্যমে তার সৃষ্ট মানবজাতিকে যে সকল আদেশ পাঠিয়েছেন, তা বিভিন্নভাবে নবী রাসূলগণ কর্তৃক সংরক্ষিত হয়েছে। স্বস্বধর্মের লোকদের বংশপরম্পরায় মুখে মুখে, পাথরের গায়ে, পাথর খন্ডে, গাছের পাতায় বা অন্য কোনো মাধ্যমে সৃষ্টিকর্তা কর্তৃক প্রেরিত বিধিবিধানসমূহ সংরক্ষণ করা হয়েছে । ওই সকল আদেশ বা বিধি বিধানগুলোর একত্রিত রূপই হলো ধর্মগ্রন্থ, যেগুলোকে আমরা তোরা, বাইবেল কোরান বলে জানি।

নবি রাসূলগণের মধ্যে যারা রকম গ্রন্থ পেয়েছেন, তাদেরকে আমরা রাসূল বলে মানি। এ রকম রসূলদের মধ্যে নবী দাউদ আলাইহিস সালাম বা ডেভিড, মুসা আলাইহিস সালাম বা মসিহ, ঈসা আলাইহিস সালাম বা জেসাস খ্রিস্ট, এবং সর্বশেষে নবী মোহাম্মদ (স.) আল্লাহর কাছ থেকে গ্রন্থ পেয়েছিলেন । 

ফেরেস্তা জিব্রাঈল () এর মাধ্যমে সকল রসূলগণ গ্রন্থগুলো পেয়েছিলেন। নবীদের মধ্যে সকল নবীদেরকে রসূল বলা হয়।

 

নবী মোহাম্মদ () এর অনুসারীদের মতে বর্তমানে পৃথিবীতে তোরা বাইবেলের যে সংস্করণ রয়েছে, তা মূল গ্রন্থের পরিবর্তিত রূপ। এতদসত্ত্বেও বর্তমানে প্রাপ্ত তোরা বাইবেলে আল্লাহর একাত্বতা সম্বলিত অনেক শ্লোক বা বাক্য রয়েছে। আসুন আমরা এবার আল্লাহর একাত্মতাবাদ সংশ্লিষ্ট শ্লোকগুলো ইহুদিদের ধর্মগ্রন্থ তোরা খ্রিস্টানদের ধর্মগ্রন্থ বাইবেল হতে জেনে নেই।

ইহুদিদের ধর্মগ্রন্থের নাম তোরাহ্ যেটি পাঁচটি চাপ্টারে বিভক্ত। যেমন বেড়েসিট (Be-reshit), সেইমেজ (Shemot), হাইখাহ (Va-yikra),  বিমিদবার (Be-midbar), বায়িকরা  (Va-yikra),  and ডিমারিম   বা 

দেবারিম (Devarim) যা ইংরেজিতে হয় যথাক্রমে জেনেসিস (genesis) , এক্সওডাস (exodus), লেভেটিকাস (Leviticus), নাম্বারস (Numbers) and   ডিউটেরনমি   (Deuteronomy)

এই পাঁচটি চ্যাপ্টারের শেষেরটি অর্থাৎ ডিউটেরনমি সৃষ্টিকর্তার পরিচয় ও একত্ববাদ সম্পর্কিত।  তোরাহকে হিব্রু বাইবেলও বলা হয়। ডিউটারোনোমিতে তিনটি অংশ রয়েছে, এক থেকে এগারো অনুচ্ছেদে ইসরায়েল জাতির ইতিহাস বর্ণিত হয়েছে।

বারো থেকে ছাব্বিশ অনুচ্ছেদে আল্লাহর বিধি বিধান ও আল্লাহ কর্তৃক মনোনীত মানুষের জীবন নির্বাহ নির্দেশিকা বর্ণিত হয়েছে। 

আর শেষের সাতাশ থেকে চৌত্রিশ অনুচ্ছেদে আল্লাহর বিধিবিধানসমূহ  মেনে চলা ও আল্লাহর প্রতি বান্দার ভালোবাসার গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।

তোরার শেষের চ্যাপ্টার ডিউটারোনোমিতে ষষ্ঠ অধ্যায়ের চতুর্থ অনুচ্ছদে বলা হয়েছে

"Hear O Israel: the LORD is our God, the LORD is One" 

"হে ইস্রায়েল শোন: প্রভু আমাদের ঈশ্বর, প্রভু এক"। অর্থাৎ ইহুদিদের ধর্মগ্রন্থ তোরাহ্ তে স্পষ্টভাবে সৃষ্টিকর্তার একাত্মতা ঘোষণা করা হয়েছে। 

এবারে বাইবেল এর মধ্যে আল্লাহর একাত্বতার বর্ণনাগুলোতে আমরা শুনে নেই।  পল দি অপাসল (Paul the Apostle)  কর্তৃক লিখিত বাইবেল এর প্রথম টিমোথি (Timothy) অংশে দ্বিতীয় অধ্যায়ের পঞ্চম অধ্যায়ে উল্লেখ রয়েছে,

- কারণ একজন ঈশ্বর আছেন, এবং ঈশ্বর ও মানুষের মধ্যে একজন মধ্যস্থতাকারী আছেন, তিনি খ্রীষ্ট যীশু ৷

এ শ্লোকটি ইসলাম ধর্মের দর্শনের সাথে মিল খায়। ইসলাম ধর্মের প্রবর্তক হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামও আল্লাহ ও বান্দার মধ্যে মধ্যস্থতাকারী ছিলেন, যিনি জিব্রাইল ফেরেস্তার মাধ্যমে আল্লাহর আদেশ পেয়ে তার সঙ্গীদের মধ্যে সে আদেশগুলো প্রচার করতেন।

বাইবেল এর ইসাইয়া (Isaiah) খন্ডের তেতাল্লিশ  অধ্যায়ের এগারো অনুচ্ছেদে উল্লেখ করা হয়েছে,

আমি, - আমিই প্রভু; এবং আমার পাশে আর কোন ত্রাণকর্তা নেই।

বাইবেল এর জেমস (James) ভার্সন এর দ্বিতীয় অধ্যায় জেনেসিস (genesis) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে,

-তুমি বিশ্বাস করো যে ঈশ্বর এক; এতে তুমি ভালই করেছ,  এমনকি শয়তানরাও এটা বিশ্বাস করে এবং আল্লাহর ভয়ে শয়তানরা কাঁপছে।

বাইবেল এর মার্ক্স্ (Marks) ভার্সনের অধ্যায় ১২, অনুচ্ছেদঃ ২৯  উল্লেখ করা হয়েছে
যীশু তার শিষ্যের প্রশ্নের উত্তর এভাবে দিয়েছিলেন, -
 "সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল, 'হে ইস্রায়েল, শোন: প্রভু আমাদের ঈশ্বর, প্রভু এক৷

এভাবে বাইবেলে আল্লাহর একত্ববাদের সমর্থনে অনেক শ্লোক রয়েছে।  ইসাইয়া খন্ডের পঁয়তাল্লিশ অধ্যায়ের পাঁচ নম্বর অনুচ্ছেদে উল্লেখ করা হয়েছে,

- আমিই প্রভু, এবং আমি ছাড়া আর কেউ নেই, আমি ছাড়া আর কোনো ঈশ্বর নেই।

নিউ টেস্টামেন্টের করিন্থিও (Corinthians) এবং মার্কসের সম্পাদনায়ও সৃষ্টিকর্তার একাত্বতার সমর্থন রয়েছে।

তবে বাইবেল এর বিভিন্ন স্থানে জেসাসকে আল্লাহর পুত্র ও আল্লাহর ক্ষমতার সমান ক্ষমতায়িত বলেও অনেক শ্লোকের উল্লেখ রয়েছে।

এবার আসুন আমরা পবিত্র কোরান থেকে সৃষ্টিকর্তার একত্ববাদ  সম্পর্কে একটু জানি। সূরা আম্বিয়ার বাইশ নম্বর আয়াতে আল্লাহ্পাক বলেন,

বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।

 

لَوۡ کَانَ فِیۡہِمَاۤ اٰلِہَۃٌ اِلَّا اللّٰہُ لَفَسَدَتَا ۚ فَسُبۡحٰنَ اللّٰہِ رَبِّ الۡعَرۡشِ عَمَّا یَصِفُوۡنَ

 

যদি এ দুটিতে অর্থাৎ আকাশ ও জমিনে, আল্লাহ ব্যতীত অন্য উপাস্য থাকত, তবে উভয়ই ধ্বংস হয়ে যেত। সুতরাং, পবিত্র আল্লাহ, আরশের অধিপতি, এরা (মুশরিকরা) যা উচ্চারণ করে তার ঊর্ধ্বে। এ আয়াতে বোঝানো হয়েছে যে দুটি সৃষ্টির যদি একাধিক পরিচালক থাকতো, তা হলে দুজন পরিচালকের মতভেদের কারণে দুটিই ধ্বংস হয়ে যেত। কারণ, একাধিক পরিচালকের মধ্যে মতভেদ হওয়াটা স্বাভাবিক একটি ব্যাপার। 

 

সূরা এখলাছের প্রথম আয়াতে আল্লাহ পাক বলেন,

বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।

 

قُلْ هُوَ اللَّهُ أَحَدٌ

 

বলুন আল্লাহ এক।


এভাবে পবিত্র কোরানের দ্বিতীয় সূরার একশত ৬৩  ও ২৫৫ নম্বর আয়াতে, তৃতীয়  সূরার ২, ৬ ও ১৮ নম্বর আয়াতে, পঞ্চম সূরার ৭৩ নম্বর আয়াতে, ষষ্ঠ সূরার ১০২ ও 106 নম্বর আয়াতে, সপ্তম সূরার ১৫৮ নম্বর আয়াতে, নবম সূরার ১৩১ ও ১২৯ নম্বর আয়াতে, দশম সূরার ৯০ নম্বর আয়াতে, এগারোতম সূরার ১৪, ৫০, ৬১  ও ৮৪  নম্বর আয়াতে, তেরোতম সূরার ৩০ নম্বর আয়াতে, ১৪ তম সূরার ৫২ তম আয়াতে আল্লার একত্ববাদের উল্লেখসহ কাউকে আল্লাহ্পাকের সমকক্ষ ভাবতে ও` আল্লাহ পাকের সাথে অন্য কাউকে শরিক না করার জন্য আদেশ দেয়া হয়েছে

যে সকল সুরে আল্লার সাথে কাউকে শরিক না করার জন্য তাকিদ দেয়া হয়েছে, সেগুলো হলো  সূরা 2 ও আয়াত ১৬ : সূরা আয়াত ২, সূরা ১৭ : আয়াত ৪২, সূরা 20: আয়াত ১5, সূরা 20: আয়াত ৯৮, সূরা ২১ : আয়াত ২৫, সূরা 21: আয়াত ৮৭, সূরা ২৩ : আয়াত ২৩, সূরা ২৩ : আয়াত ৩২, সূরা ২৩ : আয়াত ৯১, সূরা ২৩ : আয়াত ১১৬, সূরা ২৭ : আয়াত ২৬, সূরা ২৮ : আয়াত ৮৮, সূরা ৩৮ : আয়াত ৫, সূরা ৩৮ : আয়াত ৬৫, সূরা ৩৯ : আয়াত ৬, সূরা ৪০ : আয়াত ৬২, সূরা ৪৩ : আয়াত ৮৪, সূরা ৪৪ : আয়াত ৮, সূরা ৪৭ : আয়াত ১৯, সূরা ৫৯ : আয়াত ২২, সূরা ৫৯ : আয়াত ২৩, সূরা ৬৪ : আয়াত ১৩, সূরা ৭৩ : আয়াত ৯ ও সূরা ১১২: আয়াত ১।

 

মূলত, বর্তমানকার ইসলাম ধর্মাবলম্বীরা বিশ্বাস করে যে আদি পিতা হজরত আদম আলাইহিস সালাম হতে শুরু করে মোহাম্মদ (স.) পর্যন্ত যত নবী এসেছেন, সবারই ধর্ম ছিল ইসলাম।

ইসলাম শব্দের অর্থ আত্মসমর্পণ।  অর্থাৎ বান্দা তার জীবন-সম্পদ সবকিছুই সৃষ্টিকর্তায় সমর্পন করবে।  এবং তার সমস্ত সময় ও শ্রম সৃষ্টিকর্তার সন্তষ্টির জন্য ব্যায় করবে।

ইসলাম ধর্মে এটাও বিশ্বাস করা হয় যে,  এ পর্যন্ত পৃথিবীতে যত নবী এসেছেন, সকল নবীদের উম্মতরাই মুসলিম। তবে মূল ধর্মগ্রন্থ পরিবর্তন করে যারা নিজেদের সম্পাদিত বা রচিত ধর্মগ্রন্থ অনুসরণ করে থাকেন, মুসলিমরা তাদেরকে মুসলিম বলে গণ্য করেন না।

তাহলে এতোক্ষনের আলোচনা হতে আমরা জানলাম যে, তোরাহ্, বাইবেল ও কোরানে আল্লাহ পাকের একত্ববাদের কথা উল্লেখ রয়েছে? নন সেমেটিক অনেক ধর্ম, যেমন, ব্রহ্ম, আর্য্য এমনকি জরথুস্ত্রবাদ (Zoroastrianism) বা পারসিক ধর্মেও আল্লার  একত্ববাদকে স্বীকার করা নেয়া হয়েছে।

হিন্দু ধর্মের ভগবত গীতার উপনিষদ এক থেকে তিন এবং বেদের (Vedas) বিভিন্ন উপনিষদেও সৃষ্টিকর্তার একাত্বতার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। হিন্দুদের ধর্মগ্রন্থ বেদের উপনিষদ ৬, অধ্যায় ২ ও শ্লোক ১ এ উল্লেখ করা হয়েছে,

- তিনি এক, দ্বিতীয় ছাড়া।

এমনকি, শিখ ধর্মেও একেশ্বরবাদকে   মেনে নেয়া হয়। 

এ পর্যন্ত যতটুকু আলোচনা করা হলো, তার মূল বার্তা দাঁড়ায় এই যে, সৃষ্টিকর্তা একজনই।  তবে সৃষ্টের   কারুর কারুর মাঝে সৃষ্টিকর্তার ক্ষমতার বন্টনকে কোনো কোনো ধর্মে মেনে নেয়া হয়, যা ইসলাম ধর্মাবলম্বীরা বিশ্বাস করেন না।

কোনো সৃষ্টকে সৃষ্টিকর্তার সাথে তুলনা না করার জন্য ইসলাম ধর্ম ছাড়াও আরো অনেক ধর্মে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

যেমন, বাইবেলের রাজা জেমস ভার্সনের রেভেলেশন (Revelation) খন্ডে অধ্যায় এক, অনুচ্ছেদ    উল্লেখ রয়েছে

 - আমিই আলফা এবং ওমেগা, 
শুরু এবং শেষ, 
প্রভু বলেন, যা আছে, যা ছিল এবং যা আসবে, সর্বশক্তিমান 
এখানে খ্রিস্টধর্মে `আলফা এবং ওমেগা বলতে, , গ্রীক বর্ণমালার প্রথম এবং শেষ অক্ষর দুটোকে বোঝানো হয়েছে।
ঈশ্বরের ব্যাপকতাকে ব্যাখ্যা করতে আলফা এবং ওমেগা শব্দ দুটি বাইবেল  ব্যাবহারিত হয়েছে। 
বাইবেলের ঈসায়ী খন্ডে অধ্যায় বিয়ালিশ, অনুচ্ছেদ  ৮ এ উল্লেখ করা হয়েছে, 
- আমিই সদাপ্রভু; এটাই আমার নাম; আর আমার মহিমা আমি অন্যকে দেব না, খোদাই করা মূর্তিতে আমার প্রশংসাও দেব না।
ঈসায়ী খন্ডে অধ্যায় তেতাল্লিশ, অনুচ্ছেদ  এগারোতে প্রভু বলেন, 
-     আমি, আমিই সদাপ্রভু, আমি ছাড়া আর কোন ত্রাণকর্তা নেই।
 
প্রিয় দর্শক শ্রোতা, এতোক্ষনের আলোচনা হতে আমরা জানলাম, - অধিকাংশ ধর্মগ্রন্থেই সৃষ্টিকর্তার একত্বতার দলিল রয়েছে। 
ইতোপূর্বে উল্লেখিত মুসলমানদের ধর্মগ্রন্থ কোরানের সূরা আম্বিয়ার বাইশ নম্বর আয়াতে আল্লাহ্পাক বলেন;
-     যদি এ দুটিতে, অর্থাৎ আকাশ ও জমিনে, আল্লাহ ব্যতীত অন্য উপাস্য থাকত, তবে উভয়ই ধ্বংস হয়ে যেত। সুতরাং, পবিত্র আল্লাহ, আরশের অধিপতি, এরা (মুশরিকরা) যা উচ্চারণ করে তার ঊর্ধ্বে। 
 
এ আয়াতের ব্যাখ্যাটি যদি আমরা এভাবে করি, 
- যদি একটি গাড়ির দুজন চালক থাকে, 
একটি বিমানের দুজন প্রধান পাইলট থাকে, একটি শহরের দুজন মেয়র থাকে, 
একটি দেশের দুজন প্রধানমন্ত্রী থাকে, 
তাহলে তাদের মধ্যে মতের অমিল হবেই। 
এবং, পরিণামে যথাক্রমে পরিচালনায় দুজন করে চালক থাকা গাড়িটি, বিমানটি, শহরটি এবং দেশটির ধ্বংস অনিবার্য।  
পরিশেষে আমরা এটাই সিদ্ধান্ত নিতে পারি যে সৃষ্টিকর্তা একজনই। 
শুধু তাই নয়, সৃষ্টিকর্তার ক্ষমতার অংশীদারিত্বও কাউকে দেয়া যাবে না। 
 সম্পর্কিত আর একটি ভিডিও আপনাদের জন্য আমি পরবর্তী পর্যায়ে উপস্থাপন করবো ইনশাআল্লাহ !   
আজ তাহলে  পর্যন্তই। 
 লিখাটি পড়ার জন্য আপনাদেরকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। 
 লিখাটিতে  উপস্থাপিত তথ্যগুলো আপনার কাছে সঠিক মনে হলে বন্ধুদেরকে আমার ব্লগের লিংকটি শেয়ার করুন, যাতে অন্যরাও  তথ্যগুলোর ব্যাপারে ওয়াকিবহাল হতে পারে। 
সৃষ্টিকর্তা আমাদেরকে সঠিক পথে চলার তৌফিক দান করুন।  
আমীন।
আসসালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ।  
 Related video link:
https://www.youtube.com/watch?v=FZe42tNIWNo
Source links
https://en.wikipedia.org/wiki/Existence_of_Godhttps://www.theguardian.com/education/2004/mar/08/highereducation.uk1#:~:text=A%20scientist%20has%20c

https://www.divinity.cam.ac.uk/files/can_we_prove_gods_existence.pdfalculated%20that,existence%20of%20an%20omnipotent%20being.

Bible Jeremiah 29:13-14

https://www.everystudent.com/features/is-there-a-god.html

 

 

 

 https://en.wikipedia.org/wiki/Monotheism

https://theconversation.com/who-is-allah-understanding-god-in-islam-39558

https://www.kingjamesbibleonline.org/Bible-Verses-About-One-God/

https://www.kingjamesbibleonline.org/Bible-Verses-About-One-God/

https://www.openbible.info/topics/one_god

https://www.thelastdialogue.org/article/the-topic-one-god-mentioned-in-quran/hat

https://www.irfan-ul-quran.com/english/qid/15/What-happens-if-there-were-more-than-one-God-in-the-universe

https://dacc.edu/assets/pdfs/PCM/jesusisgod.pdf

No comments

Powered by Blogger.