আল্লাহ, প্রভু, গড, ঈশ্বর ইনি কি আছেন?
Is there any god?
আল্লাহ,
প্রভু,
গড,
ঈশ্বর
ইনি
কি আছেন?
আপনিকি জানেন, ঐতিহাসিকভাবে মানুষ কবে থেকে সৃষ্টিকর্তা সম্মন্ধে ভাবতে শুরু করেছে?
দর্শনতত্ত্ব ও ধর্মতত্ত্বের আলোকে সৃষ্টিকর্তার অবস্থান কোথায়?
সৃষ্টিকর্তা আছেন কিনা, দার্শনিকদের গবেষণায় কি বলে?
সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্বের ব্যাপারে ধর্মগ্রন্থগুলো কি কি বলে?
আধুনিক এই সভ্য যুগে সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্বের ব্যাপারে বিজ্ঞান
কি বলে?
সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্বের সত্যতা কি আমরা বিজ্ঞান দিয়ে প্রমান
করতে পারবো?
কেনইবা বা আমরা সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্বে বিশ্বাস স্থাপন করবো?
ইত্যাদি প্রশ্নের জবাব আমরা আজকের নিবন্ধটিতে খুঁজবো।
খ্রিস্টের জন্মের চারশত বছর পূর্বে মহাজাগতিক চিন্তাভাবনার ভিত্তিতে প্রাচীন যুগের দার্শনিক প্লেটো (Plato) এবং এরিস্টটল (Aristotle) সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্ব সম্মন্ধে চিন্তা ভাবনার অবতারণা করেছিলেন। তাদের মতে, ঈশ্বর বা প্রভু হচ্ছে অস্তিত্বহীন বস্তুর একজন কারিগর। অর্থাৎ সৃষ্টিকর্তা বলতে কিছুই নেই।
তবে একাদশ শতাব্দীতে সেইন্ট এনসেলম (Saint
Anselmn) নামে একজন ইতালিয়ান পাদ্রী দর্শন-তত্ত্বের ভিত্তিতে ঈশ্বরের অস্তিত্বের ব্যাখ্যা করেন এবং ঈশ্বরের অস্তিত্বের ব্যাপারটিকে প্রতিষ্ঠা করেন।
আরো পরের দিকে দার্শনিকরা
ঈশ্বরের
অস্তিত্বের পক্ষে-বিপক্ষে তাদের তত্ত্বসমূহ প্রচার করেন। জার্মান দার্শনিক ফ্রেডারিক নিটযা
(Friedrich Nietzsche)
এবং ব্রিটিশ গণিতবিদ বার্ট্রান্ড রাসেল
(Bertrand Russell)
সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্ব
কে পুরোপুরি অস্বীকার করেন।
প্রিয় দর্শক,
পরের কথাগুলো বলার আগে একটি কথা বলে রাখি,
এই ভিডিওতে যে সকল উপাত্ত দেয়া হয়েছে,
সেগুলোর উৎসসমূহের লিংক ভিডিওর ডেসক্রিপশন বক্সে দেয়া থাকবে। বিস্তারিত দেখে নিতে পারেন।
এবারে আলোচনায় আসি। ঈশ্বরের অস্তিত্বের ব্যাপারটি আজও অনেক দেশে কিছু কিছু লোকের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বহীন। এরা কোনো ধর্মে বিশ্বাসী নয়
- আর এদেরকে আমরা নাস্তিক বলে থাকি।
তবে ঈশ্বরের উপর বিশ্বাস এবং ঈশ্বরের উপাসনা করার ব্যাপারটি সুপ্রতিষ্ঠিত হওয়ার প্রমান মেলে মূলত ইহুদি,
খ্রিস্টান ও মুসলিমদের আদি পয়গাম্বর ইব্রাহিমের সময়কাল হতে,
যার প্রমান তোরাহ্,
বাইবেল ও কোরানে রয়েছে।
আল্লাহ, প্রভু বা ঈশ্বর আছেন কিনা,
এ বিষয়ের উপর চৌদ্দ বছর আগে ২০০৪ সালে যুক্তরাজ্যের ম্যানচেস্টার বিশ্ববিদ্দালয়ে ডঃ স্টিফেন আনউইন (Dr.
Stephen Unwin) নামে এক ব্যাক্তি একটি গবেষণা করেছিলেন। যে
গবেষণার
ফলাফল হলো -
ঈশ্বর থাকার সম্ভাবনা ৬৭ ভাগ। গবেষণার ফলাফলটি পরবর্তীকালে গার্ডিয়ান পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। তার গবেষণাটি বে-ইস (Beyes)
তত্ত্বের উপর ভিত্তি করে পরিচালিত করা হয়েছিল। বেইস তত্ত্বটি কোনো বস্তুর অস্তিত্ব আছে কিনা,
তা পরীক্ষা করতে ব্যাবহারিত হয়।
সৃষ্টিকর্তা থাকার সম্ভাবনা ৬৭ ভাগ,
এর মানে এই দাঁড়ায় যে সৃষ্টিকর্তা নেই,
এটা মোটেও নিশ্চয় করে বলা যাবে না।
তার গবেষণাটি ধর্মতত্ত্বের ব্যাপারগুলোকে বিবেচনায় না এনে কেবলমাত্র গাণিতিক বা পরিসংখ্যানিক নিয়মে করা হয়েছিল। তবে সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্বের উপর ডঃ বেইসএর ব্যাক্তিগত বিশ্বাস ছিল ৯৫ ভাগ।
ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদালয়ের অধ্যাপক ডক্টর ক্যাথেরিন পিকষ্টক
(Dr. Catherine Pickstock ) এর মতে অস্তিত্বতত্ত্বের যুক্তিতে সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্ব থাকতেই হবে। সৃষ্টিকর্তা নেই বললে এটা হবে একটি বিতর্কিত বিষয়।
বাইবেল এর নিউ টেস্টামেন্ট আন্তর্জাতিক সংস্করণের রোমান চ্যাপ্টারের প্রথম অধ্যায়ের ১৯-২১ নম্বর শ্লোকে উল্লেখ করা হয়েছে
- যখন ঈশ্বরের অস্তিত্বের সম্ভাবনার কথা আসে, বাইবেল বলে যে এমন কিছু লোক আছে যারা পর্যাপ্ত প্রমাণ দেখেছে, কিন্তু তারা ঈশ্বর সম্পর্কে সত্যকে চাপা দিয়েছে
(Romans 1:19-21)।
ইহুদি ঐতিহাসিকদের মতে, জ্যাকবের একজন পুত্র জেরেমায়াহ বলেন, যারা ঈশ্বর আছেন কিনা জানতে চান? ঈশ্বর কি বলে শুনুন, "তুমি আমাকে খুঁজবে এবং আমাকে পাবে; যখন তুমি তোমার সমস্ত হৃদয় দিয়ে আমাকে খুঁজবে, তখন আমি তোমাকে খুঁজে পাব (Hebrew bible, Jeremiah 29:13-14)।
ইসলাম ধর্ম মতে আল্লাহকে না দেখেই আল্লাহের অস্তিত্বের উপর বিশ্বাস স্থাপন করতে হবে। ইসলাম ধর্মে আল্লাহর অস্তিত্বের উপর বিশ্বাস স্থাপন করার নামই ঈমান। বিজ্ঞানের প্রমাণভিত্তিক প্রচেষ্টায় আল্লাহর উপর বিশ্বাস স্থাপন করা ইসলাম প্রয়োজন মনে করে না। তবুও সৃষ্টিকর্তা যে একজন আছেন, তার প্রমান আমরা বিশ্ব ভ্রম্মান্ড সৃষ্টি-কৌশল হতেই নিশ্চিত হতে পারি। যেমন,
জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা বলেন,
সূর্য্য একটি নক্ষত্র যার চারদিকে গ্রহ উপগ্রহ প্রতিনিয়ত প্রদক্ষিণ করছে। এই গ্রহ উপগ্রহদের মধ্যে কোন একটি গ্রহ বা উপগ্রহ যদি একটি হতে আর একটি বিচ্ছুত হয়,
তাহলে এই গ্রহ-উপগ্রহ একটি আর একটির সাথে সংঘর্ষ খাবে এবং পুরো সৌরজগৎটি ধ্বংস হয়ে যাবে।
পৃথিবী সৃষ্টির সময়কাল সাড়ে
চার বিলিয়ন বছর। সৃষ্টির প্রথম হতে প্রত্যেকটি গ্রহ উপগ্রহ যে যার কক্ষপথে আবর্তিত হচ্ছে। আজ পর্যন্ত এ নিয়মটিই চলে আসছে। তাহলে ভাবুন, কেউ না কেউ গ্রহ
উপগ্রহের নিজ নিজ কক্ষপথে আবর্তিত হওয়ার ব্যাপারটির তদারকি করছেন। আর এই তদারকির কাজটি যিনি করছেন তিনিই
ঈশ্বর
বা আল্লাহ। বিজ্ঞানীরা বলেন,
সূর্য্য কেন্দ্রিক সৌরজগতের মতো এ
রকম
কোটি কোটি সৌরজগৎ মহাশূন্যে বিরাজ করছে।
বাদ দিন সৌরজগৎ,
গাছের শরীর গঠন কৌশল ও গাছের মধ্যে এক জায়গা হতে আরেক জায়গায় পানির চলন প্রক্রিয়াটি উপলব্ধি করুন। গাছের শরীরকে টিকিয়ে রাখার জন্য পানির দরকার। আমরা জানি,
পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ শক্তির কারণে পানি নিচের দিকে প্রবহমান হয়। কিন্তু এই মাধ্যাকর্ষণ শক্তির বিপরীতে গাছের
শিকড়
কর্তৃক উত্তোলিত পানি
গাছের
শরীরের নিচ থেকে উপরের দিকেও প্রবাহিত হয় এবং শরীরের সর্বাঙ্গে পানি সরবরাহ করে। এটি সৃষ্টিকর্তা সম্ভব করেছেন সৃষ্টিকর্তার
সৃষ্ট
একটি কৌশলের মাধ্যমে। তা হলো পানির অনন্য পৃষ্ঠ টান
(unique
surface tension)।
তাহলে ভাবুন, এরকম কত কৌশল যে উদ্ভিদ ও প্রাণীকুলের মধ্যে
রয়েছে! ভাবলে অবাক হয়ে যাবেন। আপনি যদি এ সকল
বিষয়ে গবেষণা করেন, স্রষ্টিকর্তার প্রতি আপনার মাথা হেট্ হয়ে যাবে। আমি আপনি কি কখনো ভেবেছি, এ সকল কৌশলগুলো কে রচনা
করেছে? যিনি করেছেন, তিনিই আল্লাহ বা ঈশ্বর।
ইহুদিদের ধর্মগ্রন্থ তোরাহ্, খ্রিস্টানদের ধর্মগ্রন্থ বাইবেল এবং মুসলমানদের ধর্মগ্রন্থ কোরানে আল্লাহের অস্তিত্ব সম্মন্ধে অনেক বাক্য রয়েছে।
ইহুদিদের ধর্মগ্রন্থ তোরাহ্ এর দশটি আদেশের প্রথমটি হলো -
আমিই প্রভু তোমার ঈশ্বর। অর্থাৎ এই শ্লোকে ঈশ্বরের অস্তিত্বের ঘোষণা বিদ্যমান রয়েছে। খ্রিস্টধর্মে ঈশ্বরকে চিরন্তন,
সর্বোত্তম সত্তা হিসাবে বিশ্বাস করা হয়, যিনি বিশ্ব ভ্রম্মান্ডের সমস্ত কিছু সৃষ্টি করেন এবং সংরক্ষণ করেন।
হিব্রু বাইবেল, ইহুদিদের ধর্মগ্রন্থে সৃষ্টিকর্তাকে এল (el)
এলোই (eloih)
বলে উল্লেখ করা হয়েছে। মুসলমানদের কাছে সৃষ্টিকর্তার আসল নাম আল্লাহ। খ্রিস্টানরা আল্লাহকে গড,
লর্ড বা প্রভু বলে ডাকেন। হিন্দু ধর্মে এক ঈশ্বরকে স্বীকার করলেও তারা মনে করেন ঈশ্বর সবকিছুতে আছেন।
শিখ ধর্মে বিশ্বাস করা হয়,
ঈশ্বর এক,
তিনি সৃষ্টিকর্তা,
তিনি ভয় ও ঘৃণার ঊর্ধ্বে,
তিনি অমর,
তিনি জাতকহীন,
তিনি স্বয়ম্ভু,
তিনি মহান ও করুনাময়। জরাথ্রুস্টিয় ধর্মগ্রন্থে দোস্তি
অধ্যায়ে উল্লেখ করা হয়েছে, -ঈশ্বর সদৃশ কিছুই নাই,
তিনি আদি ও অন্তহীন,
তার পিতামাতা স্ত্রী পুত্র কিছুই নাই,
তার কোনো আকার আকৃতি নাই,
দৃষ্টি তাকে প্রত্যক্ষ করতে পারে না,
এবং কল্পনা শক্তিও তাকে আয়ত্ত করতে অক্ষম। এখানে
উল্লেখ্য,
জরাথ্রুস্টিয় ধর্মের অনুসারীরা এই ধর্মটিকে একটি পয়গম্বরী ধর্ম বলেও দাবি করেন। এ ধর্মটিকে পার্শি ধর্মও বলা
হয়।
ইসলাম ধর্মের ধর্মগ্রন্থ
কোরানে উল্লেখ করা হয়েছে,
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম
قُلۡ
هُوَ اللّٰهُ اَحَدٌ
اَللّٰهُ
الصَّمَدُ
لَمۡ
یَلِدۡ ۬ۙ وَ لَمۡ یُوۡلَدۡ
وَ
لَمۡ یَکُنۡ لَّهٗ کُفُوًا اَحَدٌ
- তিনিই আল্লাহ, এক- অদ্বিতীয়। আল্লাহ কারও মুখাপেক্ষী নন। তিনি কাউকে জন্ম দেননি এবং তাঁকেও জন্ম দেয়া হয়নি। আর তাঁর কোন সমকক্ষও নেই (আল কোরান সুরাহ ১১২)
।
কোরানের আর একটি আয়াতে রয়েছে,
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম
لَيۡسَ كَمِثۡلِهِۦ شَيۡءٞۖ وَهُوَ ٱلسَّمِيعُ ٱلۡبَصِيرُ
অর্থাৎ, এমন কিছুই নাই যা আল্লাহর মতো হতে পারে, তিনি সর্বশ্রোতা ও সর্বদ্রষ্টা (আল কোরান, সুরাহ আসশূরা, আয়াত ১১)।
এবার আসুন,
বৈজ্ঞানিক ভিত্তিতে সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্বের কিছু প্রমান আমরা আবার উল্লেখ করি।
আচ্ছা বলুনতো? গরুর বাচ্চা কেন গরুর মতো হয়? মানুষের বাচ্চা কেন মানুষের মতো হয়? আজ পর্যন্ত কি দেখেছেন, পৃথিবীতে যত মানুষ আছে, একজনের চেহারার সাথে আর একজনের চেহারার মিল আছে? না নেই,
বিজ্ঞানীরা বলেন, প্রত্যেকের শরীরে ডিএনএ এর চেইনের বিন্যাস অন্যের শরীরের চাইতে ভিন্ন রকমের। তাই একজন মানুষ আর একজনের মতো হয় না। তাহলে এ বিষয়টিকে কে পরিচালনা করছেন? যিনি করছেন, তিনিই আল্লাহ বা ঈশ্বর।
আপনি কি জানেন, আমার আপনার শরীরে একেকটি কোষ কতটুকু বড়? একটি কোষের আকার মাত্র ১০০ মাইক্রো মিটার। অর্থাৎ, আমাদের একটি চুলের যা ব্যাস, তার দশ ভাগের এক ভাগ।
আর এই একটি কোষে ছয় শত কোটি জোড়া নিউক্লিওটাইড রয়েছে। নিউক্লিওটাইড
হলো কোষের মধ্যে জৈব রাসায়নিক কণা,
যা বংশ পরম্পরায় আমাদের যার যার বৈশিষ্ট রক্ষা করে থাকে। কল্পনা করতে পারেন?
আমাদের বৈশিষ্ট্যে স্বাতন্ত্রতা আনতে এই সূক্ষ্ণতম কণাগুলোকে কে সৃষ্টি করেছেন বলুনতো?
যিনি করেছেন,
তিনিই আল্লাহ বা ঈশ্বর।
আর একটা সহজ উদাহরণ দেই। আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা স্টেশনের মতে পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা মাইনাস পঁচিশ হতে প্লাস পঁয়তাল্লিশ ডিগ্রী সেলসিয়াস। কিন্তু সূর্য্য হতে পৃথিবীর দুরুত্ব হলো একশত একান্ন দশমিক নয় মিলিয়ন কিলোমিটার। কক্ষপথে চলতে চলতে পৃথিবী যদি কখনো সূর্য্য
হতে আরো
দূরে চলে আসতো,
তাহলে আমরা অতিরিক্ত ঠান্ডায় জমে মরে যেতাম।
বিপরীতদিকে, কক্ষপথে চলতে চলতে পৃথিবী যদি কখনো সূর্য্য হতে আরো কাছে এসে যেত,
তাহলে আমরা পুড়ে মরতাম
।
তাহলে,
নিশ্চই কেউ না কেউ আছেন এ ব্যাপারটি দেখা শোনা করার জন্য?
যিনি এ ব্যাপারটির দেখা-শোনা করছেন,
তিনিই আল্লাহ বা ঈশ্বর।
আমার একটি প্রশ্নের উত্তর দিন
তো। আপনি এই পৃথিবীতে কতদিন বাঁচতে চান?
পাঁচ,
দশ,
একশো,
দুশো
বছর?
আপনি
কি
তা নির্ধারণ করতে পারেন?
না পারবেন না। কেউ কেউ বুড়ো হয়ে মরেন। আবার কেউ কেউ শিশু বা মধ্য বয়সে
মরেন।
মৃত্যুর উপরে আমার আপনার কোনো হাত নেই। যিনি এটির ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেন,
তিনিই আল্লাহ বা ঈশ্বর।
আপনি কি জানেন আমাদের আচার-আচরণ বা বৈশিষ্ট কিভাবে নির্ধারিত বা নিয়ন্ত্রিত হয়?
এটি কে বা কারা নিয়ন্ত্রিত করে?
এটি বুঝতে হলে আসুন কম্পিউটার কিভাবে কাজ করে এটা আগে জেনে নেই।
আমরা যে কম্পিউটারে লিখি, তা কম্পিউটার কি পড়তে পারে? না। পারে না। কম্পিউটার পড়তে পারে মাত্র দুটি অক্ষর, সে দুটি হলো, জিরো ও ওয়ান। অর্থাৎ শূন্য ও এক।
এই শূন্য ও এক কে বিভিন্নভাবে সাজিয়ে আমরা যদি লিখি ০১১০০০০১, কম্পিউটার এই অংকগুলোকে ইংরেজি অক্ষর A এর একটি কোড হিসেবে নেবে যা আমরা কম্পিউটারের মনিটর হিসেবে A দেখতে পাবো। অর্থাৎ, আপনি ইংরেজি A লিখলে কম্পিউটারের ভেতর ০১১০০০০১ কোডের একটি সিগন্যাল যাবে, যা একটি ইংরেজি A অক্ষর হয়ে কম্পিউটারের পর্দায় ভেসে আসবে। এভাবে বাংলা, ইংরেজি সকল ভাষার অক্ষরের জন্য বৈজ্ঞানিকরা এরকম অসংখ্য কোড তৈরী করে কম্পিউটারে স্থাপন করে রেখেছেন।
কম্পিউটার কার্য্যপদ্ধতিটির উদাহরণ এ জন্য দিলাম যে, সৃষ্টিকর্তা
মাত্র চারটি জৈব রাসায়নিক কণা ব্যবহার করে ওই কণাগুলোকে বিভিন্নভাবে বিন্যস্ত করে আমাদের
বৈশিষ্ট্যে স্বাতন্ত্রতা দান করেছেন।
আর একটু ব্যাখ্যা করি। আমাদের শরীরের কোষের মধ্যে ক্রোমোসোমে চার রকমের জৈব রাসায়নিক নিউক্লিওটাইড কণা রয়েছে, যেগুলো আমাদের বংশধারার বৈশিষ্টের স্বাতন্ত্রতা সংরক্ষণ করে। সাধারণভাবে এই জৈব রাসায়নিক কণাগুলোর নাম ডিএনএ। এদের মাধ্যমে বংশ পরম্পরায় আমাদের সকল বৈশিষ্ট্য নির্দ্ধারিত ও নিয়ন্ত্রিত হয়। বিজ্ঞানীরা এই চারটি ডিএনএ কে ইংরেজি
A T G ও
C দ্বারা প্রকাশ করে থাকেন।
সৃষ্টিকর্তা এগুলোকে আমাদের কোষের মধ্যে বিভিন্নভাবে সাজিয়ে
থাকেন,
যেমন
CGTGTGACTCGCTCCTGAT। এটিকে যদি আমরা একটি ডিএনএ এর শিকল বা চেইন
বলি,
স্থান অদল বদল করে আপনি এরকম আরো কোটি কোটি ডিএনএ চেইন তৈরী করতে পারেন। এরকম এক একটি চেইন আপনার শরীরের এক একটি বৈশিষ্ট্যকে সংরক্ষণ বা প্রকাশ করবে।
মানব শরীরে এই চারটি ডিএনএ এর পরস্পর অবস্থানগত পার্থক্যের কারণে আমাদের প্রত্যেকের আচরণ বা গুনগত বৈশিষ্ট্যে পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়। ডিএনএ এর এরকম বিন্যাস যিনি তদারকি করছেন, তিনিই আল্লাহ বা ঈশ্বর।
এ যুগের সেরা পদার্থ বিজ্ঞানী স্টিফেন হকিং কি বলেছেন জানেন?
বলেছেন,
সৃষ্টিকর্তা বলে কেউ নেই। বিশ্বকে কেউ নিয়ন্ত্রণ করে না। বিশ্ব তার আপন নিয়মেই চলে। আমার মতো
প্রতিবন্ধীরা ওই সৃষ্টিকর্তার অভিশাপের শিকার।
বুঝেছেন? অভিমান,
শুধুই অভিমান,
লৌ গেহরিগ
(Lou
Gehrig) রোগে আক্রান্ত স্টিফেন হকিং এর পক্ষ থেকে সৃষ্টিকর্তার উপর এ অভিমান। এ রকম অভিমান প্রকাশ করে প্রকারান্তরে তিনি সৃষ্টিকর্তাকে স্বীকার করেই নিলেন
(কালের কণ্ঠ অনলাইন)।
পরিশেষে আমরা এটাই সিদ্ধান্ত নিতে পারি যে সৃষ্টিকর্তা আছেন, অর্থাৎ আল্লাহ, প্রভু বা ঈশ্বরের অস্তিত্ব রয়েছে। তাহলে আর একটি প্রশ্ন আমাদের সামনে এসে যায়, সৃষ্টিকর্তা কয়জন? পৃথিবীর বিভিন্ন ধর্মে সৃষ্টিকর্তার সংখ্যা নিয়ে প্রচুর বিতর্ক রয়েছে। এ ব্যাপারটি আমরা আর একটি ভিডিও থেকে জানবো। পরবর্তী ভিডিওটির জন্য অপেক্ষা করুন।
এই ভিডিওতে যে সকল উপাত্ত দেয়া হয়েছে, সেগুলোর উৎসসমূহের লিংক ভিডিওর ডেসক্রিপশন বক্সে দেয়া থাকবে। বিস্তারিত দেখে নিতে পারেন।
এই ভিডিওটিতে যে সকল উপাত্ত দেয়া হয়েছে, সেগুলো সঠিক বলে মনে হলে এই চ্যানেলটিকে শেয়ার করুন, যাতে সৃষ্টিকর্তা বা আল্লাহ অস্তিত্ব সম্পর্কে অন্যরাও জানতে পারেন।
আল্লাহ্পাক আমাকে আপনাকে সবাইকে সঠিক পথে চলার সক্ষমতা দান করুন। আমীন।
আস্সালামুআলাইকুম
আজ তাহলে এ পর্যন্তই।
ভিডিওটি দেখার জন্য আপনাদেরকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
https://en.wikipedia.org/wiki/Existence_of_God
Bible Jeremiah 29:13-14
https://www.everystudent.com/features/is-there-a-god.html
Related video link
No comments